⭕ ওয়েব ৩.০ আসলে কি?
✅ ওয়েব ৩.০ টেকনোলোজির দুনিয়ায় সাড়া জাগানো একটি নতুন সৃষ্টি। সহজ করে বলতে গেলে ওয়েব ৩.০ হলো “ওয়েব ২.০ + ক্ষমতার হস্তান্তর”।
⭕ ওয়েব ৩.০ কি এটি নিয়ে কথা বলার আগে আমরা জেনে নিই ওয়েব ১.০ ও ওয়েব ২.০ কি?
✅ ওয়েব ১.০ — ওয়েব এর সর্বপ্রথম যুগ হলো ওয়েব ১.০। ওয়েব ১.০ কে বলা হতো “রিড অনলি ওয়েব”। ওয়েব ১.০ এর সময় যদি আপনার সামনে কোনো কন্টেন্ট অর্থাৎ কোনো ছবি কিংবা কোনো আর্টিকেল আসতো আপনি সর্বোচ্চ সেটা দেখতে পারতেন কিংবা রিড করতে পারতেন। কিন্ত কোনো ধরনের এঙ্গেজমেন্ট সম্ভব ছিলোনা। আপনি চাইলেই সেখানে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানাতে পারতেন না। যার কারনে এটাকে “রিড অনলি ওয়েব” বলা হয়েছে।
✅ ওয়েব ২.০ — ওয়েব ২.০ কে বলা হয় “রিড রাইট টেকনোলজি”। ওয়েব ১.০ তে আপনারা যেই কন্টেন্ট গুলো শুধু রিড করতে পারতেন সেগুলোতে এখন ওয়েব ২.০ এর বদৌলতে ইন্টারেকশন করতে শুরু করলেন। অর্থাৎ এতদিন যেগুলো দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো আপনি চাইলেই এখন সেখানে নিজের মতামত জানানোর মতন কাজ করতে পারতেন। যার ফলে যেকোনো কন্টেন্টে আপনার মতামত, চিন্তাভাবনা শেয়ার করার কাজ ও করতে পারলেন (অপরপক্ষের ভালো লাগুক কিংবা খারাপ 😛) আপনি আপনার অপিনিওন লিখে দিতে পারেন। ওয়েব ২.০ এর কারনে অনেক জনপ্রিয় কিছু অ্যাপ চলে আসে যেমন — “ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, আমাজন” ইত্যাদি। কিন্তু অসুবিধার জায়গা সৃষ্টি হয় যখন নিরাপত্তার কথা আসে। ওয়েব ২.০ তে মানুষের ডাটা একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা থাকে। যার ফলে ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি হুমকি তে থাকে। বড় বড় টেক জায়ান্টগুলো তাদের একটি নিজেদের সার্ভারে ব্যবহারকারীদের তথ্য জমা রাখে এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারীর তথ্য বিক্রি করেছে এমন নিউজও আছে।
✅ ওয়েব ৩.০ — কেন ওয়েব ৩.০ কে “ওয়েব ২.০ + ক্ষমতার হস্তান্তর” বলেছি?
ওয়েব ৩.০ এর ফলে ইন্টারনেটের সবচেয়ে নিরাপদ যুগে আমরা প্রবেশ করতে যাচ্ছি। ওয়েব ৩.০ তে সবধরনের ক্ষমতা ব্যবহারকারীর হাতে থাকে। অর্থাৎ ওয়েব ৩.০ তে আর ডাটা গুলো কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা থাকেনা। এর ফলে ব্যবহারকারী নিজেই তার তথ্য নিয়ন্ত্রন করতে পারে। ওয়েব ৩.০ কে বলা হচ্ছে “রিড-রাইট-এক্সিকিউট” টেকনোলজি।
ওয়েব ৩.০ ব্লকচেইন টেকনোলোজি এর উপর নির্মিত। ব্লকচেইন টেকনোলোজি হলো সেই প্রযুক্তি যা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিংবা NFT তে ব্যবহৃত হচ্ছে। যার কারনে হ্যাকিং করাও হয়ে যাবে অসম্ভব।
ইতোমধ্যে ইথারিয়াম কিংবা বিটকয়েন এ ব্লকচেইন প্রযুক্তি দেখা গিয়েছে এবং এখানে সাইটের মালিক কে তা জানা অনেক টাই কষ্টসাধ্য। এসব সাইট কিংবা সার্ভিস গুলো সরকার অথবা অন্য কোনো অথোরিটি চাইলেই বন্ধ করে দিতে পারেনা।
বর্তমানে টেক জায়ান্ট গুলো ব্যবহারকারীর তথ্য স্টোর করে রাখে এবং প্রয়োজনে বিলিয়নে ডলারের বিনিময়ে সেগুলো কেনা-বেচা করতে পারে। কিন্ত ওয়েব ৩.০ এসব তথ্য এনক্রিপ্টেড করে দিবে যার ফলে প্রতিষ্ঠান গুলো এমন কিছু করার ক্ষমতা হারাবে।
এছাড়া ও আরও বিভিন্ন অঙ্গনে ওয়েব ৩.০ নতুন মোড় সৃষ্টি করতে চলেছে। যার ফলে সৃষ্টি হবে টেকনোলজির একটি নতুন যুগ।
এটি ওয়েব ৩.০ নিয়ে প্রথম পর্ব। ক্রমান্বয়ে সিরিজ আকারে আরও খুঁটিনাটি ইনফরমেশন আসবে।